নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজে উপাধ্যক্ষ পদে সদ্য নিয়োগ পাওয়া এ এস কাইউম উদ্দীন আহমেদ যোগদান করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে পড়েছেন। গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে তিনি যোগদান করতে আসার আগে থেকেই শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। এমন অবস্থায় যোগদান না করেই বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন কাইউম উদ্দীন আহমেদ। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, কলেজের ইতিহাস বিভাগের চেয়ারম্যান এ এস কাইউম উদ্দীন আহমেদ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ওই সময় কলেজে নানা আর্থিক অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কলেজ তহবিল থেকে দুর্নীতি করে টাকা উত্তোলন করে তিনি বিতর্কিত হয়েছিলেন। এ ছাড়া ওই সময় কলেজের এক অধ্যক্ষ যোগদান করতে আসার সময় তাঁকে মারধরের নির্দেশদাতা ছিলেন তৎকালীন ওই শিক্ষকনেতা। তাঁরা এমন বিতর্কিত একজন শিক্ষককে চান না। বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেছেন, মূলত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এই বিক্ষোভের আয়োজন হলেও এর মূল উদ্যোক্তা ছিলেন জেলা ছাত্রলীগের একটি অংশ। কলেজ প্রশাসন সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার (২০ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব শ্রীকান্ত কুমার চন্দ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশের পাঁচটি সরকারি কলেজে নতুন অধ্যক্ষ ও দুটি কলেজে উপাধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়েছে সরকার। এসব প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি কলেজের অধ্যাপকদের। এই নিয়োগের ভিত্তিতে এ এস কাইউম উদ্দীন আহমেদ উপাধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করার জন্য গতকাল সকালে কলেজে আসবে এমন খবরে সকাল ১০টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এবং মূল ফটকসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানে শিক্ষাথীরা অবস্থান নেন। এরপর বেলা ১১টার দিকে তিনি কলেজে যোগদানের জন্য গেলে প্রশাসনিক ভবনের সামনের ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। ফলে কাইউম উদ্দীন প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করতে পারেননি। পরে তিনি যোগদান না করেই কলেজ ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। এ প্রসঙ্গে বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আতিকুল্লাহ মুনিম বলেন, ছাত্রলীগ সাধারণ ছাত্রদের দাবির সঙ্গে সব সময় ছিল, এখনো আছে। উপাধ্যক্ষ পদে পদায়ন পাওয়া অধ্যাপক এ এস কাইউম উদ্দীন আহমেদ একজন বিতর্কিত ব্যক্তি। নানা দুর্নীতি-অনিয়মেরও অভিযোগ রয়েছে। এখন ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। একজন বিতর্কিত শিক্ষক এই কলেজে উপাধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করলে এই শান্তি বিঘ্নিত হবে। এ জন্য সধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাঁরা সংহতি জানিয়েছেন। ঘটনার বিষয়ে অধ্যাপক এ এস কাইউম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমি উপাধ্যক্ষ পদে যোগদান করতে কলেজে গেলে কিছু শিক্ষার্থী আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করে। তবে কী কারণে তারা এটা করেছে, তা বুঝতে পারছি না।’ শিক্ষার্থীদের অভিযোগকে ‘অপপ্রচার’ দাবি করে তিনি বলেন, এর নেপথ্যে স্বার্থান্বেষী একটি শিক্ষক মহলের ইন্ধন থাকতে পারে। জানতে চাইলে কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘সকাল থেকে কিছু ছেলে প্রশাসনিক ভবনের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিয়েছে। তারা লিখিতভাবে আমাকে কিছু জানায়নি। তবে শুনেছি উপাধ্যক্ষ পদে পদায়নপ্রাপ্ত এ এস কাইউম উদ্দীন যাতে যোগদান করতে না পারেন, এর জন্য তারা সেখানে অবস্থান নিয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তা ছাড়া কাইউম সাহেবের সঙ্গেও কথা হয়েছে। তিনি যোগদান করতে এলে আমার দায়িত্ব অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’
Leave a Reply